Top News

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে মারধর, জড়িতদের গ্রেপ্তারে সময় বেঁধে দিয়ে অবরোধ প্রত্যাহার >>>

 

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে মারধর, জড়িতদের গ্রেপ্তারে সময় বেঁধে দিয়ে অবরোধ প্রত্যাহার



 (খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগে সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটে।)

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় জড়িত পরিবহনশ্রমিকদের গ্রেপ্তারের জন্য একটি সময়সীমা নির্ধারণ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বাস টার্মিনাল অবরোধের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন। আজ বুধবার রাত পৌনে নয়টার দিকে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বাস টার্মিনাল থেকে ক্যাম্পাসে ফিরে যান।

শিক্ষার্থীরা আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার মধ্যে পরিবহনশ্রমিকদের গ্রেপ্তার করার জন্য সময় বেঁধে দিয়েছেন এবং বলেছেন, যদি ওই সময়ের মধ্যে তাঁদের গ্রেপ্তার করা না হয়, তবে তাঁরা আবারও অবরোধ কর্মসূচি শুরু করবেন।
খুলনা জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. জাহিদ হোসেন খান প্রথম আলোকে জানান, ‘শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। যা ঘটেছে তা ভুল বোঝাবুঝির ফল। আমরা এ নিয়ে দুঃখিত। আমরা চেষ্টা করছি, সকল পক্ষ যেন শান্তিতে থাকে। ছাত্রদের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই।’


জাহিদ হোসেন আরও বলেন, ‘সংঘর্ষের সময় একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে এটি কে বা কারা করেছে, তা আমাদের জানা নেই। আমরা ছাত্রদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ তুলব না। ওই গাড়ি ভাঙচুরের পেছনে তৃতীয় পক্ষের ষড়যন্ত্র থাকতে পারে।’

ভাড়া নিয়ে বিতর্কের কারণে এক শিক্ষার্থীকে মারধর এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সোনাডাঙ্গা আন্তজেলা বাস টার্মিনাল মোড় অবরোধ করে রাখেন। আজ সন্ধ্যার পর তাঁরা সেখানে গিয়ে টার্মিনাল অবরোধ করেন। রাত পৌনে নয়টার দিকে তাঁরা অবরোধ তুলে নেন।
এর আগে পরিবহনশ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে একাধিকবার পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে বিপুল সংখ্যক সেনা, নৌ ও পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। তাঁরা শিক্ষার্থীদের সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।



খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. মুহিবুল্লাহ জানান, গোপালগঞ্জ থেকে রাজীব পরিবহনের একটি বাসে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী খুলনায় আসছিলেন। ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে ওই শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছিত করেন বাসশ্রমিকরা। বিষয়টি জানার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী সোনাডাঙ্গায় অবস্থিত বাস টার্মিনালে গিয়ে বাসশ্রমিকদের সঙ্গে মারধরের কারণ জানতে চান। এ সময় পরিবহনশ্রমিকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান, যার ফলে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে আগামীকাল সকালে সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা দায়েরের পরিকল্পনা করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক নাজমুস সাদাত। তিনি উল্লেখ করেন, শ্রমিকদের হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। খুলনায় অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য শ্রমিকদের এই কার্যকলাপের পেছনে কারণ অনুসন্ধান করা প্রয়োজন।



সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, রাজীব পরিবহনে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র খুলনায় আসার সময় পরিবহনের সদস্যরা তাঁকে আসতে দেননি। পরে তাঁকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নামানোর পরিবর্তে টার্মিনালে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়—এমন তথ্যের ভিত্তিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা তাঁকে উদ্ধার করতে টার্মিনালে যান।

Post a Comment

Previous Post Next Post