Top News

এস আলম গ্রুপের ছয়টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা >>>

 



শ্রমিকেরা কারখানা বন্ধের নোটিশ পাওয়ার পর বিক্ষোভে অংশ নেন। আজ বেলা তিনটার দিকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার কালারপুল এলাকায় এস আলম কোল্ড রোল্ড লিমিটেডে এই ঘটনা ঘটে।

চট্টগ্রামের বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের ছয়টি কারখানা বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে কারখানায় বন্ধের নোটিশ লাগানো হয়, যা দেখে শ্রমিকরা তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ শুরু করেন। তবে কর্মকর্তারা পরিস্থিতির উন্নতি হলে পুনরায় কারখানা চালু করার আশ্বাস দেন।











এস আলম গ্রুপের মানবসম্পদ ও প্রশাসনের প্রধান মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিনের স্বাক্ষরিত নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অনিবার্য কারণে আগামীকাল বুধবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারখানাগুলো বন্ধ থাকবে। তবে কারখানার নিরাপত্তা, সরবরাহ ও জরুরি বিভাগ খোলা থাকবে।

এ ছয়টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ, এস আলম পাওয়ার প্ল্যান্ট লিমিটেড, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেড, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেড–নফ, এস আলম পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড এবং ইনফিনিটি সি আর স্ট্রিপস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এর মধ্যে দুটি কারখানা চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার কালারপুলে, তিনটি ইছানগরে এবং একটি বাঁশখালীতে অবস্থিত।

আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে কালারপুল এলাকায় এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেডে গিয়ে দেখা যায়, শতাধিক শ্রমিক কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ করছেন। তাঁরা আকস্মিক নোটিশে কারখানা বন্ধ হওয়ার কারণে পরিবার ও পরিজন নিয়ে সমস্যায় পড়ার কথা তুলে ধরেন।













মোহাম্মদ ইউনুস, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেডের নিরাপত্তা পরিদর্শক হিসেবে জানান, কারখানার ভেতরে কথা বলার জন্য কোনো কর্মকর্তা উপস্থিত নেই, তাই ভেতরে প্রবেশ করা সম্ভব নয়।

অন্যদিকে, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেডের উৎপাদন ব্যবস্থাপক নাজিম উদ্দীন মন্তব্য করেন, ‘আমাদের কারখানার কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকলেও হঠাৎ করে ছুটির নোটিশ জারি করা হয়েছে। কেন সাধারণ ছুটি দেওয়া হলো, তা আমাদের জানা নেই। আমরা এই পরিস্থিতিতে হতবাক।’











প্রথম আলো, এস আলম গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ের দুই কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছে। তাঁরা নাম প্রকাশ না করে জানান, ব্যাংকের সহযোগিতা না পাওয়ার কারণে কাঁচামাল আমদানি সম্ভব হচ্ছে না। কাঁচামাল আমদানি না হলে কারখানা চালু রাখা সম্ভব নয়। এই কারণে সাময়িকভাবে কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। এ ছয়টি কারখানায় অন্তত ১২ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী কর্মরত ছিলেন বলে তাঁরা উল্লেখ করেন।

এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা সাইফুল আলম সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকটতম সহযোগী হিসেবে পরিচিত। ২০১৭ সালে এই গ্রুপটি ইসলামী ব্যাংক অধিগ্রহণ করে। এরপর তারা একাধিক ব্যাংক ও বিমা প্রতিষ্ঠান দখল করে এবং ব্যাংকগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ উত্তোলন করে, যা নাম-বেনামে করা হয়। একইসাথে, গ্রুপের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য ঋণ অনুমোদন করা হয়।










এস আলমের অধীনে পরিচালিত ব্যাংকগুলো হলো ন্যাশনাল ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক এবং বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এসব ব্যাংককে এস আলমের হাত থেকে মুক্ত করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছেন, ডিজিএফআইয়ের সহযোগিতায় কিছু ব্যাংক দখল করার পর ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলমের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম এবং তাঁর সহযোগীরা 'অন্তত' ১০ বিলিয়ন বা ১ হাজার কোটি ডলার ব্যাংকব্যবস্থা থেকে 'বের করে নিয়েছেন'।



Post a Comment

Previous Post Next Post